নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি) বরিশাল ডিপো ম্যানেজার জামিল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। এরি অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারীদের সাক্ষগ্রহন করা হয়েছে। বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. শহিদুল ইসলাম তাদের সাক্ষগ্রহন করেন। অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে কোন বক্তব্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম। জানাগেছে, ‘দীর্ঘ দিন ধরেই বরিশাল বিআরটিসি ডিপো ম্যানেজার জামিল হোসেন এবং তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে দায়িত্বকালিন সময়ে নানা অনয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এমনকি এ নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে।
অপরদিকে ডিপো ম্যানেজার জামিলসহ তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে গত বছরের ৩ অক্টোবর বিআরটিসি বাসের নিয়মিত যাত্রী হিসেবে সিদ্দিক হাওলাদার নামের ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই অভিযোগটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. শহিদুল ইসলামকে। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত ডিপো ম্যানেজার জামিল হোসেন, ভারপ্রাপ্ত ফোরম্যান আমির হোসেন কারিগর ওরফে জীনের বাদশা এবং ভারপ্রাপ্ত ক্যাশিয়ার মো. ইমরানকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তলব করা হয়। তারা সেখানে হাজির হয়ে নিজেদের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন। একই সময় অভিযোগকারী বরিশাল নগরীর কাশিপুর বাঘিয়া এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিক হাওলাদারসহ অন্যান্য সাক্ষীরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে সাক্ষ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ডিপো ম্যানেজারের বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ‘জামিল হোসেন তার অধিনস্ত সহযোগিদের নিয়ে দায়িত্বকালিন সময়ে অবৈধভাবে ওয়েবিল তৈরি করে দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করে আসছেন। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তারা দুর্নীতির মাধ্যমে নামে-বেনামে সম্পদের পাহার গড়েছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ‘বিআরটিসি বাস চালকের নামে চললেও অভিযুক্তরা চালকদের বদলীসহ চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়ে প্রতিনিয়ত দু’টি ওয়েবিল তৈরি করে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়। চালকরা বদলী ও চাকুরি হারাবার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। তাছাড়া যাত্রীরা বিআরটিসিতে যাতায়ত করতে গেলে বসার সিট পাচ্ছে না। তাদের দাঁড়িয়ে গাদাগাদি করে গন্তব্যে যাত্রা করতে হয়। অথচ ডিপো ম্যানেজার জামিল তার ভগ্নিপতি জহিরুল ইসলামকে কন্ড্রাক্টরের দায়িত্ব দিয়ে দুটি ওয়েবিল তৈরি করেন। এর একটিতে কমিশন ও জিপি বাবদ আলাদা আলাদা টাকা রেখে টিকিট কেটে ওয়েবিল তৈরি করে যাত্রী দেখানো হয়। ওই ওয়েবিল গায়েব করে চালকের সাক্ষর নিয়ে ব্লাংক ওয়েবিলে মনগড়া তথ্য দিয়ে রাজস্ব খাতে জমা দেয়। এতে সরকারের প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকা রাজস্ব খোয়া যাচ্ছে। অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে ডিপো ম্যানেজার জামিল হোসেনকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করা সত্যেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তাছাড়া বিষয়টি তদন্তাধিন থাকায় এ নিয়ে কোন ধরনের কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. শহিদুল ইসলাম।
Leave a Reply